(প্রিয়.কম) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের ডেফলবাড়ির বাসিন্দা মালেকা বেগম। অজপাড়াগ্রামের এই গৃহবধূ প্রায় ৩৬ বছর যাবৎ বিনা পয়সায় শিক্ষা দিচ্ছেন তার এলাকার শত শত নারী ও শিশুদের। তার বাড়ির উঠোনটি এখন হয়ে উঠেছে ‘জ্ঞানের আলো শিক্ষালয়’ হিসেবে।
প্রতিদিন ভোরে শত শত নারী ও শিশু বই-খাতা নিয়ে দলবেঁধে পড়তে আসে এখানে। জানা যায়, প্রায় তিন যুগ ধরে মালেকা বেগম বিনা পয়সায় গ্রামের নারী ও শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি কোরআন পড়ানো হয় এসব শিক্ষার্থীকে। নিরক্ষর ও হতদরিদ্র নারীদের বিদ্যাপীঠে পরিণত হয়েছে ‘জ্ঞানের আলো শিক্ষালয়’।
১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার প্রিয়.কমের সঙ্গে কথা হয় মালেকা বেগমের ছেলে আবুল হোসেন গ্রীনের।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে জ্ঞানের আলো শিক্ষালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এলাকার গৃহবধূরাও বাড়ির উঠানে চট পেতে বসে কোরআন ও প্রাক-প্রাথমিকের জ্ঞান অর্জন করছেন।’
তিনি জানান, এ গ্রামের আবদুল কাদেরের সঙ্গে তার বিয়ে হয় প্রায় ৩৬ বছর আগে। বিয়ের পর তিনি খেয়াল করেন ফুলজোড় নদীর তীরবর্তী ভাঙনকবলিত ডেফলবাড়ি গ্রামের শিশুদের পবিত্র কোরআন শেখার কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি এ গ্রামের নারীদের অনেকেই কোরআন পড়তে জানে না। তাই বিয়ের কয়েক বছর পর তিনি ঠিক করেন শিশু ও গৃহবধূদের কোরআন পাঠ শেখাবেন।
কয়েকটি মাদুর ও চটের ব্যবস্থা করে তার বাড়ির উঠানেই শুরু করেন তিনি কোরআন শিক্ষা কার্যক্রম। আবুল হোসেন ২০১১ সালে এ বিদ্যালয়ের নামকরণ করেন ‘জ্ঞানের আলো শিক্ষালয়’। সেই থেকে প্রায় ৯ বছর ধরে এ নামেই চলছে এর কার্যক্রম।
আবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের অভাবের সংসারেও আমার মা শিশু ও নারীদের লেখাপড়া শিখিয়ে কোনো টাকা-পয়সা নেন না। মায়ের এ কাজের জন্য ছেলে হিসেবে আমি গর্বিত।’